সাফজয়ী ফুটবলার কৃষ্ণা রাণী সরকার এর জীবনী। SumonBDnet
Posted by
Admin
Your Ads Here
সাফজয়ী ফুটবলার কৃষ্ণা রাণী সরকার এর জীবনী। SumonBDnet |
সাফজয়ী ফুটবলার কৃষ্ণা রাণী সরকার এর জীবনী।SumonBDnet
কৃষ্ণা রাণী সরকারের - জন্ম ১ জানুয়ারী ২০০১। একজন বাংলাদেশের সাফজয়ী মহিলা ফুটবল খেলোয়াড়, যিনি বসুন্ধরা কিংস এর মহিলা দলে ও বাংলাদেশ মহিলা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ফরোয়ার্ড হিসাবে খেলে থাকেন। পূর্বে, তিনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দল ও সুতি ভি এম. পাইলট মডেল হাইস্কুল, টাঙ্গাইলের অধীনে খেলেছেন।কৃষ্ণা রানী সরকারের জীবনী | Football player Krishna Rani Sarkarপোস্টের শুরুতেই লিখেন, "হরেকৃষ্ণ" চ্যাম্পিয়ন। কে এই Krishna Rani Sarkar?
↪নামঃ কৃষ্ণা রানী সরকার
↪পিতাঃ শ্রী বাসুদেব সরকার
↪মাতাঃ শ্রী নমিতা রানী সরকার
↪গ্রামঃ উত্তর পাথালিয়া, ইউনিয়ন - নগদা শিমলা, গোপালপুর, টাংগাইলের মেয়ে।
বাবার অভাবের সংসারে খেয়ে না খেয়ে বেড়ে উঠেছেন "কৃষ্ণা"। সাধারণ ভাবেই ছোটকাল থেকেই মেয়েরা শিশুরা পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল, কুলা এসব নিয়ে খেলা করে থাকে। কিন্তু কৃষ্ণা তিনি ব্যস্ত থাকতো ভাইদের সাথে সারাদিন সাইকেল, ডাংগুলি আর ফুটবল নিয়ে। কৃষ্ণার এসব কাণ্ড দেখে গ্রামের লোকেরা নানা ধরণের কথা শুনাতেন। কৃষ্ণা রাণী সরকারের মা নীরবে কষ্টে তা সর্য্য করতেন সে সব নেগেটিভ কথা বার্তা। কৃষ্ণা রাণী সরকারের মা তার মেয়ের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে তাকে উৎসাহ যোগাতেন তিনি। কিন্তু কৃষ্ণা রাণী সরকারের মা স্বপ্নেও ভাবেননি মেয়ে তার এতদূর যাবে। এত মানুষ তার মেয়েকে চিনবেন ও ভালোবাসবেন।
কৃষ্ণা আজ স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছে শুরু করেছেন। কিন্তু এই অবস্থানে আসতে কত কাঠ-খড় তাকে পোড়িয়ে হাজার কষ্ট পার করতে হয়েছে সে গুলি পর্দার আড়ালেই রয়ে গেছে। সে যখন নিজ গ্রামে খেলতো তখন প্রতিবেশীরা বাড়ির এসে এসে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে। তারা ভাবতো কৃষ্ণার সাথে মিশলে অন্য মেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবে। কুসংকারে প্রভাবিত হয়ে গ্রামের প্রতিবাসীরা এই কাজ গুলো করতো।
কৃষ্ণা রাণী সরকারের মা যখন সফল জননী হিসেবে উপজেলায় শ্রেষ্ঠ পদক পাওয়ার পর জেলায় যাচ্ছিলেন তখন কৃষ্ণার মায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয় কৃষ্ণা রাণী সরকারের সাথে ঘটে যাওয়া আপনার সাথে সবচেয়ে আনন্দ দায়ক ও বেদনা দায়ক ঘটনাটি কী?' তখন তিনি মূহুর্তেই তাঁর চোখ থেকে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছিল। তিনি কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলতে শুরু করলেন,
একবার একদিন প্রতিবেশীরা প্রচণ্ড বকেছিল অকথ্য ভাষায়। সেদিন আমি কিছুতেই সহ্য ও মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি অনেক রাগে ক্ষোভে দৌঁড়ে গিয়ে ফুটবলটি নিয়ে বসে আমার মেয়ে কৃষ্ণার ফুটবলটাকে কুচিকুচি করে কেটে ফেলি। কাটার পর যখন ওর(কৃষ্ণার) কান্না করা দেখি তখন মনে হলো আমি আমার হৃৎপিণ্ড কেটে কুচিকুচি করে ফেলেছি। ততক্ষণে মেয়ের চোখ থেকে হাজার নদীর অশ্রু বয়ে চলেছে। মা-মেয়ে জুড়িয়ে ধরে প্রচণ্ড কাঁদেছিলাম। চোখের জল মুছে কাল-বিলম্ব না করে সেদিনই তাকে বল কিনে এনে দিলাম। বল হাতে পেয়ে মেয়ে আমার কী যে খুশি হলো তা বলার ভাষা আমার নেই।
এই ঘটনার কিছুদিন পর শুরু হলো বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট। কৃষ্ণা খেলতে গেলো উত্তর পাথালিয়া প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রী হিসেবে সূতী ভি এম সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক জনাব গোলাম রায়হান বাপন-এর চোখে কৃষ্ণার নৈপুণ্যতা ধরা পড়ে। ততক্ষণে সারা গোপালপুরে কৃষ্ণা কৃষ্ণা জয়ধ্বনী উঠে গেছে। অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুল লতিফ কৃষ্ণার বাড়িতে যান। তারপর পরিবারের সাথে কথা বলে কৃষ্ণা রাণী সরকার কে সূতি-ভি-এ- স্কুলে-ভর্তি এবং খেলাধুলার অনুশীলনের-দায়িত্ব-নেন।
শুরু হয়ে গেলো কৃষ্ণার জীবনের নতুন অধ্যায়। দিনগুলো একদিকে যেমন ছিল আনন্দঘন অন্য দিকে তেমন চরম সংকটাপন্ন। কৃষ্ণার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় নয় কিলোমিটার। ভোর ৫:৩০মিনিটে খেয়ে অনেক সময় না খাওয়া দাওয়া করে কৃষ্ণা যেতো অনুশীলনের জন্য।
বাংলাদেশ আজ গর্বিত কৃষ্ণাদের মতো সন্তান পেয়ে। শুধু কৃষ্ণা রাণী সরকার নই স্বপ্না রানী, ইতি রানী, সাথী বিশ্বাসের মতো সনাতনী মেয়েরাও আছেন জাতীয় দলে। এছাড়া শুধুমাত্র একই স্কুলে পড়ুয়া ৬ থেকে ৮ জন মেয়েরাই জাতীয় দলে খেলছে। একই স্কুলের ৬ থেকে ৮ জন।
যাদের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন তাদের উক্ত স্কুলেরই একজন শিক্ষক যিনি সবার বাড়িতে গিয়ে অনেক বুঝিয়ে এতদূর এনেছেন। এরপর রয়েছে চট্টগ্রামের চাকমা বা পাহাড়ি মেয়েরা। এই হলো দেশের মূল নারী ফুটবল দল। এদের নিয়েই এই অপরাজিত অর্জন। এই মহিলা ফুটবল দলের প্রত্যেকটি মেয়েদেরকেই সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করতে হয়েছে, তাদের পরিবারকে সয্য করতে হয়েছে সব সমাজিক বহু কটুক্তি। সবকিছুর উপযুক্ত যোগ্য জবাব দিয়েছে এই মেয়েরা। সেই কটুক্তিকারীরাই এখন প্রশংসায় ভাসাচ্ছে তাদের। এই সোনার মেয়েরা আমাদের গর্বিত করেছে। এরা যেন হারিয়ে না যায়।
এদের বেশিরভাগই দরিদ্র, এদের প্রত্যকের জন্য বড় অংকের আর্থিক সাহায্য এবং উন্নত ফ্ল্যাট বরাদ্দ করে দেওয়া হোক। সারা বাংলার সম্মান এই মেয়েরা আজ দেশে ফিরে নিয়ে এসেছে। তাদের দেওয়া হক রাজসিক সংবর্ধনা। সাফজয়ী মহিলা ফুটবলারে জন্য আর্শিবাদ ও শুভকামনা এগিয়ে যাও আরো ভালো থেকে।
Your Ads Here
Your Ads Here
Your Ads Here
Your Ads Here
Newer Posts
Newer Posts
Older Posts
Older Posts
Comments